এনার্জি ড্রিংকস সম্পর্কে যে ভয়ঙ্কর সত্যটি আপনি জানেন না

enargy Drinks

বর্তমানে তরুণ বয়সের ভোক্তাদের মধ্যে কোমল পানীয় এবং এনার্জি ড্রিংক বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এখন খুব সহজেই মেলে এনার্জি ড্রিংক। এনার্জি ড্রিংক তথা চিনি এবং ক্যাফিন সমৃদ্ধ কথিত শক্তি বর্ধক পানীয় পান আপনার শরীরের জন্য আসলেই কি ভালো? জানতে বিস্তারিত পড়ুন….

বর্তমানে বিশ্বের ইউরোপ ও এশিয়াতে ৮০টির উপরে ব্র্যান্ডের এনার্জি ড্রিংক তৈরি হচ্ছে এবং বিশ্বের ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী তরুণের ৩১ শতাংশ নিয়মিত এনার্জি ড্রিংক গ্রহণ করে বলে জানা যায়। এ ছাড়াও নানান বয়সের মানুশের মাঝে এনার্জি ড্রিংকের জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এনার্জি ড্রিংকে রয়েছে চিনি ও ক্যাফিনের প্রভাবঃ এনার্জি ড্রিংকে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ক্যাফিন ও চিনি। এনার্জি ড্রিংক পানের ফলে এতে থাকা ক্যাফিন ও চিনি আপনাকে তাৎক্ষনিকভাবে অনেকটা সজীব ও উদ্যমী করে তুলবে। কিন্তু ডাক্তার মুরসালিন শেখ সাবধান করে দিয়ে বলেন প্রচুর পরিমানে ক্যাফিন ও চিনি শরীরে যাওয়ার ফলে মানুষের শরীরে নানান সমস্যা তৈরি হতে পারে যেমন স্নায়বিক দুর্বলতা , ঘুমের সমস্যা, রক্ত চাপ বৃদ্ধি পাওয়া ইত্যাদি।

ক্রীড়া পুষ্টিবিজ্ঞানী দীপশিখা আগারওয়াল বলেন, এনার্জি ড্রিংক পানের ফলে একজন মানুষের সাময়িক ভাবে শক্তি বৃদ্ধি পায় তবে যখন তাঁর উপর এনার্জি ড্রিংকের প্রভাব কেটে যাবে তখন তিনি স্বাভাবিকের চাইতেও দুর্বল অনুভব করবেন। দীপশিখা আরও বলেন এনার্জি ড্রিংকে যে কুইনিন ব্যাবহার করা হয় তা মানুষের হাড়ের অনেক ক্ষতি করে। এ ছাড়া এনার্জি ড্রিংকে থাকা প্রচুর চিনি আপনাকে অনেক মুটিয়ে দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

ডাক্তার আতাহার ওয়ানি যিনি একজন দাঁত বিশেষজ্ঞ তিনি বলেন, ”আপনাকে এনার্জি ড্রিংক অবশ্যই কম পান করতে হবে, যদিও পান করেন তাহলে অবশ্যই আপনার মুখ ভালো ভাবে পরিষ্কার করে নিবেন কারণ এর ফলে আপনার দাতে কেভেটি অর্থাৎ ক্ষত বা গর্ত তৈরি হতে পারে” এনার্জি ড্রিংকের ফলে দাঁতের এনামেল ক্ষয়ে গিয়ে দাঁতে রঙ নষ্ট হয়ে যায়। সফট ড্রিংকসের ঝাঁঝালো স্বাদ বাড়ানোর জন্যে এতে ফসফরিক এসিড ব্যবহার করা হয়। এ এসিড এত শক্তিশালী যে, একটা নখ এর মধ্যে ডুবিয়ে রাখলে ৪ দিন পর আর আপনি নখটাকে খুঁজে পাবেন না। তাছাড়া সফট ড্রিংকসে যে চিনি ব্যবহার করা হয়, ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবে এটাও এসিড তৈরি করে।

নেশাগ্রস্থত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাঃ এনার্জি ড্রিংকে যে ক্যাফিন দেয়া হয় তা নেশার উদ্রেগ ঘটাতে পারে। আপনি যদি নিয়মিত এনার্জি ড্রিংক পান করেন তাহলে কিছু সময় যদি এটি নিয়ম করে না খান তবে আপনার নানা রকম শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন আপনার ঘুম না হওয়া, হাতে পায়ে ব্যথা, মাথা ব্যথা, শারীরিক ও মানসিক অশান্তি এবং অস্থিরতা। এ বিষয়ে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বান্দারকর বলেন, এনার্জি ড্রিংক শিশুদেরও নেশাগ্রস্থ করে তোলে ফলে শিশুরা এতে আসক্ত হয়ে যেতে পারে যা শিশুদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। পিতা মাতা কে অবশ্যই তাঁর শিশুদের সব রকমের এনার্জি ড্রিংক ও স্পোর্টস ড্রিংক থেকে দূরে রাখতে হবে।

ভিটামিন এবং এমাইনো এসিডের উৎসঃ অনেক এনার্জি ড্রিংক কোম্পানি দাবি করে এনার্জি ড্রিংকে প্রচুর ভিটামিন এবং এমাইনো এসিড রয়েছে, সে হিসেবে বডি বিল্ডারদের মাঝে এনার্জি ড্রিংকের কদর অনেক বেশী। ডাক্তার মুরসালিন শেখ বলেন এনার্জি ড্রিংকে যদি ভিটামিন ও এমাইনো এসিড থাকেও তারপরও এর অন্যান্য ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচতে এর বদলে প্রাকৃতিক উপায়েও এসব ভিটামিন অনেক সহযেই পাওয়া যাবে। ক্রীড়া পুষ্টিবিজ্ঞানী দীপশিখা আগারওয়াল বলেন ফলের রস যেমন কমলার রস পান করলে খুব সহজেই শরীরে এমাইনো এসিডের অভাব পুরন করা যায়।

ক্রীড়া পুষ্টিবিজ্ঞানী দীপশিখা আগারওয়াল আরও বলেন এনার্জি ড্রিংক ও স্পোর্টস ড্রিংক নিয়ে বিড়ম্বনায় না পড়ে আপনি যখন কাজ করে অথবা খলাধুলা করে দুর্বল অনুভব করবেন তখন বেশী করে পানি পান করুন কারণ এ সময় আপনি এনার্জি ড্রিংক পান করলে এতে থাকা ক্যাফিন আপনাকে আরও বেশী ডিহাইড্রেট করে তুলবে।

কখনই এনার্জি ড্রিংকের সাথে এলকোহল মিশিয়ে পান করবেন না। কারণ এলকোহলের সাথে এনার্জি ড্রিংকের মিশ্রণের ফলে এটি আপনার শরীরের জন্য আরও বিপদ জনক হয়ে যায়। এনার্জি ড্রিংক ও এলকোহল এক সাথে মিশিয়ে পান করলে আপনার শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি হবে যার ফলে আপনার শরীরে নানা রুপ জটিলতা দেখা দিতে পারে। ক্যাফিন ও এলকোহল এক সাথে মিশিয়ে পান করার ফলে আপনার বেশী বেশী মূত্রত্যাগের বেগ আসবে ফলে আপনার শরীর পানিশূন্য হয়ে যাবে।

আমেরিকার ম্যাসাচুসেটসের ৫০ বছর বয়স্ক একদল নারী-পুরুষ যারা প্রতিদিন ১ ক্যান বা এর বেশি করে সফট ড্রিংকস পান করেছেন, তাদের ওপর ৪ বছর ধরে চালানো এক গবেষণায় দেখা গেছে, তাদের মেটাবলিক সিনড্রোম বেড়ে গেছে ৪৪%। মেটাবলিক সিনড্রোম বাড়লে ডায়াবেটিস, হৃদরোগের ঝুঁকি যেমন বাড়ে তেমনি অকালে বুড়িয়ে যায় দেহ।

ফুল বিক্রেতা থেকে দেশের প্রেসিডেন্ট

একজন প্রেসিডেন্ট কি পরিমাণ সম্মানীয় ব্যক্তি হতে পারে তা আমরা সকলেই জানি। সাধারণত প্রেসিডেন্টদের বাসভবন আলিশান হয়ে থাকে, পোশাক-আশাকে পরিপাটি থাকে, চলাফেরায় দামি গাড়ি ব্যবহার করে থাকে, আর তার নিরাপত্তায় চারপাশে নিরাপত্তা কর্মীগণ ব্যস্ত থাকে। তবে এর ব্যতিক্রমও পৃথিবীতে রয়েছে। তিনি হলেন ‘জোসে মুজিকা’ উরুগুয়ের বর্তমান প্রেসিডেন্ট।

মুজিকার বয়স যখন আট বছর তখন তার বাবা মারা যান। সংসারে নেমে আসে চরম দারিদ্র্য। এই সময় তিনি স্থানীয় এক বেকারির ডেলিভারি বয় হিসেবে কাজ শুরু করেন। আবার কখনো কখনো হোটেল বয় হিসেবেও কাজ করেন। এসবের পাশাপাশি তিনি লিলি ফুল তুলে বিক্রি করেও সংসারের খরচ যোগান। এভাবেই দারিদ্র্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যেতে থাকে তার জীবন। তরুণ বয়সে বাম চরমপন্থী নেতা হিসেবে উরুগুয়ের ত্রাস হয়ে ওঠেন তিনি। কারণ তিনি ছিলেন জনপ্রিয় বামপন্থী নেতা এনরিকে এরোর সহযোগী। কিন্তু চে গেভারা সংস্পর্শে এসে পরিবর্তন ঘটে তার চিন্তাধারার। পঞ্চাশের দশকের শেষে তীব্র মুদ্রাস্ফীতি ও রুগ্ন অর্থনীতির চাপে পড়ে মহাসঙ্কটে পড়ে উরুগুয়ে। এই সময় চে-র ভাবাদর্শে নতুন কিছু করার তাগিদ অনুভব করেন মুজিকা ও তার সঙ্গীরা।

mijiনতুন কিছু করার তাড়না থেকে মুজিকা ও তার সঙ্গীরা শোষণের বিরুদ্ধে লড়াই করা শুরু করেন। পেরুর কিংবদন্তী বিপ্লবী চরিত্র দ্বিতীয় টুপাক আমারুর নামানুকরণে তাদের হাতেই জন্ম নেয় গেরিলা বাহিনী ‘টুপামারো’। অত্যাচারীর নিধন ও দরিদ্রের পালন নীতিতে বিশ্বাসী টুপামারোদের জনপ্রিয়তা উরুগুয়ের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত সমাজে বাড়তে থাকে। ১০০ জনেরও কম মানুষ নিয়ে তাঁরা সেসময় কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিলেন অত্যাচারী শাসকদের মনে। তারা ব্যাংক লুট করে বিত্তশালীদের অবৈধ অর্থ দরিদ্রদের উন্নয়নে ব্যয় করেন। ১৯৬৯ সালে যে কারণে টাইমস ম্যাগাজিনে তাদেরকে আখ্যায়িত করা হয়েছিল ‘রবিন হুড গেরিলা’ হিসেবে। ১৯৬০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে ১৯৭০-এর দশকের শুরুর সময় পর্যন্ত স্থায়ী ছিল উরুগুয়ের শহরভিত্তিক এই বিদ্রোহ।

এক সময় তাদের দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। একারণে গতি হারায় তাদের বিপ্লব। ভাঙন শুরু হয় তাদের মধ্যে। সমাজের মঙ্গল করার বদলে তারা শুধু শুধু মানুষ অপহরণ ও খুনের কারণে জনপ্রিয়তা হারাতে শুরু করে তাদের গড়া সংগঠন ‘টুপামারো’। ১৯৭০ সালের মার্চে এক পানশালায় পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ের পর গ্রেপ্তার হন এল পেপে। তার পেটে মোট ৬টি গুলি ঢোকে। গ্রেপ্তারের পর তার ঠাঁই হয় মন্টেভিডিও শহরের পান্টা ক্যারেটাস কারাগারে। সেখান থেকে দু’বার পালিয়ে গিয়েও ১৯৭২ সালে ফের ধরা পড়েন মুজিকা। ১৯৭৩ সালের জুনে সেনাবাহিনী ক্ষমতা গ্রহণ করে একটি ক্যুয়ের মাধ্যমে। যার পরিণতি হিসেবে জেলে বন্দী মুজিকাদের জন্য অপেক্ষা করছিল ভয়াবহ বিভীষিকা।

দীর্ঘ ১৪ বছর বন্দি জীবনের পর ১৯৮৫ সালে এসে মুক্তি পান মুজিকা।১৯৮৪ সালে গণ অভ্যুত্থানের পর একনায়কতন্ত্রের অবসান ঘটার মাধ্যমে তিনি মুক্তি পান। জেল থেকে মুক্ত হওয়ার পর খুব দ্রুতই জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠেন মুজিকা। গণতান্ত্রিক রাজনীতির ধারায় ফিরে আসেন মুজিকা। জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পেছনে পুরোনো দিনের সেই রবিন হুড গেরিলা ভাবমূর্তিও হয়তো একটা বড় অবদান রেখেছে। ৮০ ও ৯০-এর দশকে উরুগুয়ে শাসন করে কলরাডো পার্টি। ১৯৯৪ সালের নির্বাচনে জয়ের কাছাকাছি এসেও হার মানে ব্রড ফ্রন্ট। তবে ৯৯ জন সাংসদের পার্লামেন্টে ঠাঁই হয় দু’জন প্রাক্তন টুপামারো নেতার। এদেরই একজন জোসে মুজিকা।

miji2২০০৫ সালে উরুগুয়ের প্রভাবশালী কলোরাডো ও ন্যাশনাল পার্টির জোটকে হারিয়ে ক্ষমতায় বসে বামপন্থী জোট ব্রড ফ্রন্ট। প্রেসিডেন্ট পদে অভিষিক্ত হন তাবারে ভাসকুয়েজ। জোসে মুজিকা ২০০৫-২০০৮ সাল পর্যন্ত পশুসম্পদ, কৃষি ও মৎস্য মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। শুধু তাই নয়, পরে তিনি সিনেটর হিসেবেও দায়িত্বে ছিলেন। বোর্ড ফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে তিনি ২০০৯ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেতেন এবং ১ মার্চ ২০১০ সালে উরুগুয়ের কার্যভার গ্রহণ করেন।

মুজিকার তুমুল জনপ্রিয়তার পিছনে রয়েছে তার ঠোঁটকাটা কথা, আদর্শবাদী ভাবমূর্তি এবং সহজ-সরল জীবন-যাপন। তার অনুগামীদের মতে, এল পেপে মুখে যা বলেন, কাজেও তা করে দেখান। সাধারণ পোষাকে চলতি ভাষায় অবিশ্রান্ত গালাগালিতে ভরপুর তার বক্তৃতা রাতারাতি জনপ্রিয়তা পায়।

উল্টো দিকে, সমালোচকরা বলেন, মুজিকার আগাগোড়াই অভিনেতা। আদতে তিনি এক পাগলাটে, বাতিকগ্রস্ত বুড়ো যিনি এখন বন্দুক ও বিপ্লব, দু’টোই সরিয়ে রেখেছেন। নিন্দুকদের কথায় অবশ্য আদৌ আমলে নেন না প্রেসিডেন্ট।

ক্ষমতায় এসে একদিকে যেমন দেশে গাঁজার চাষ ও বিপণনকে বৈধতা দিয়েছেন, তেমনই গর্ভপাত এবং সমকামী বিবাহকেও আইনি অনুমোদন প্রদান করেছেন। আবার এই মুজিকাই জাতিসঙ্ঘের সভায় ভাষণ দিতে গিয়ে সদস্যদের বলেন, ‘বিপুল অর্থব্যয়ে আয়োজিত বৈঠকে যাওয়া বন্ধ করুন। ওখানে কাজের কাজ কিছুই হয় না।’ সম্প্রতি (নভেম্বর, ২০১৪) এক জনমত জরিপে দেখা গেছে, উরুগুয়েতে মুজিকা জনপ্রিয়তা প্রায় ৬০ শতাংশ।

দীর্ঘ কষ্ঠের জীবনে প্রেম এসেছিল মুজিকারও। তারই এক বিপ্লবী সতীর্থ লুসিয়া টোপোল্যানস্কির সঙ্গে মন দেয়া-নেয়ার কাজটি সেরে ফেলেন তিনি। দীর্ঘ বিশ বছর প্রেমের পর ২০০৫ সালে এসে বিয়ে করেন তারা। আসলে বিয়ে করার মতো তেমন কোনো সুযোগই তারা এতোদিন পাননি।

শৈশব থেকেই দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত মুজিকা দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও বদলাননি তার জীবনযাপনের ধরন। ১৯৯৪ সালে যখন উরুগুইয়ান পার্লামেন্টে জায়গা করে নেন সেই সময় প্রতিদিন নিজের লড়ঝড়ে স্কুটার চেপেই পার্লামেন্টে যাতায়াত করতেন তিনি। বিয়ের পর ফুলের বাগান ঘেরা শহরতলির তিন কামরার টিনের চালওয়ালা ভাঙাচোরা বাড়িতে কুকুর-বিড়াল-মুরগি আর ভেড়াদের নিয়ে সুখে সংসার পেতেছেন তারা। প্রতিবেশীরা বেশির ভাগই সমবয়সী বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। কোন সশস্ত্র দেহরক্ষী নেই সেখানে। ঘোরাফেরার জন্য তার নিত্যসঙ্গী ২৫ বছরের পুরনো ভোক্সওয়াগান বীটল।

উরুগুয়ে প্রশাসনের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর এই ব্যক্তির বসবাসের খামার বাড়িটি দেখলে যে কেউ ভূতেরবাড়ি বলে ভুল করতে পারে। বিলাসবহুল প্রাসাদে থাকার বদলে তিনি বেছে নিয়েছেন নিতান্তই এক সাধারণ জীবন। এখনও কর্দমাক্ত পথ পেরিয়েই নিজের খামার বাড়িতে পৌঁছাতে হয় তাকে। এই অর্ধ-পরিত্যক্ত খামার বাড়ির মালিক তিনি নন, তার স্ত্রী। প্রেসিডেন্ট হওয়া সত্ত্বেও খামারে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত কৃষিকাজ করেন তিনি। খামারে চাষ করছেন বিভিন্ন রকমের ফুল। বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র এই প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত আছে মাত্র দুজন পুলিশ আর ম্যানুয়েলা নামের একটি কুকুর। তার দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত আদরের এই কুকুরটির একটি পা খোঁড়া। নিজেকে সব সময় ঋণমুক্ত রেখেছেন, আর তাই এক সময়কার বামপন্থি গেরিলা নেতা হোসে মুজিকার নামে কোনো ঋণ নেই, এমনকি নেই তার কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্টও। এমনকি নিজেকে একজন কৃষক হিসেবে পরিচয় দিতেই সবচেয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তিনি। মাথায় ভরা এলোমেলো ধূসর চুল, ক্ষুদে ক্ষুদে চোখ, কাঁচাপাকা পুরু গোঁফজোড়া, দশাসই চেহারা দেখে বয়সটা অনুমান করা মুশকিল। দেশের সর্বোচ্চ পদে আসীন হয়েও নিজের জীবন যাপনের ধারা বদলাতে রাজি হননি তিনি। সেই কারণেই বিলাসবহুল আড়ম্বর ছেড়ে নিজের পুরনো বাড়ি-গাড়ি-খামার নিয়েই দিব্যি ভালোই আছেন মুজিকা, দেশবাসী যাকে আদর করে ডাকেন ‘এল পেপে’।

২০১২ সালে তিনি সংবাদ শিরোনাম হয়েছিলেন ‘বিশ্বের সবচেয়ে গরীব প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে। তবে পুরো বিশ্ব বললেও নিজেকে কিন্তু গরিব ভাবেন না মুজিকা। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে গরীব হচ্ছে তারাই যারা খুবই বেশি বেশি চায়। কারণ যাদের চাওয়া অনেক বেশি, তারা কখনোই তৃপ্ত হয় না।’

প্রতিবছর উরুগুয়ের কর্মকর্তাদের সম্পদের বিবরণী প্রকাশ বাধ্যতামূলক। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালে প্রেসিডেন্ট তাঁর সম্পদের পরিমাণ দেখান এক হাজার ৮০০ মার্কিন ডলার। যা কিনা তাঁর ১৯৮৭ মডেলের ভক্সওয়াগন বিটল গাড়িটির দাম। ২০১২ সালের বিবরণীতে স্ত্রীর অর্ধেক সম্পদ যুক্ত করেছেন। এই সম্পদের মধ্যে রয়েছে জমি, ট্রাক্টর ও বাড়ির দাম। এতে তাঁর মোট সম্পদ দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ১৫ হাজার ডলার, যা এখনো দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্টের ঘোষিত সম্পদের মাত্র দুই-তৃতীয়াংশ।

মুজিকার অন্যতম সম্পদ বিটল কার। তবে সেটিও বোধহয় আর থাকবে না প্রেসিডেন্টের কাছে। ওই কারের জন্য ১০ লাখ ডলারের অফার পেয়েছেন তিনি। আর সহাস্যে তিনি তা বেঁচেও দিতে চান। বাসকোয়েডা ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, কারটি বিক্রি করলে ১০ লাখ ডলার পাবেন তিনি। এক আরব শেখ তাকে এ অফার দিয়েছেন। হোসে মুজিকা এও বলেছেন, তিনি অফারটি গ্রহণ করবেন কিনা ভাবছেন। আর যদি সত্যিই তিনি কারটি বিক্রি করেন তাহলে প্রাপ্ত টাকা তিনি গরীবদের সাহায্যে বিলিয়ে দেবেন।

প্রেসিডেন্ট বলেন, গাড়ির সঙ্গে তার এমন কোনো প্রতিশ্রুতি নেই যে তা বিক্রি করা যাবে না। বরং হাসি মুখেই তিনি গাড়িটি বিক্রি করতে চান। আর সেই টাকা বিলিয়ে দিতে চান আশ্রয়হীনদের জন্য, যেন তারা মাথা গোঁজার ঠাঁই পান। অবশ্য মজা করে মুজিকা বলেন, গাড়িটি তিনি তার প্রিয় কুকুর ম্যানুলার জন্য রেখে দিতে চেয়েছিলেন।

পড়াশোনা ও কাজ, কানাডায় দুটোই সম্ভব

Canada

পড়াশোনার পাঠ চুকিয়েই পেশাজীবির খাতায় নাম লেখাচ্ছেন অনেক বিদেশি শিক্ষার্থী, অর্থাৎ পড়াশোনা শেষেই চাকরি! এমন দেশের উদাহরণ দিতে গেলে প্রথম সারিতেই আসবে ‘কানাডা’। বিশ্বমানের পড়াশোনার পাশাপাশি কাজের সুযোগ থাকায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ প্রতি বছরই পাড়ি দিচ্ছে কানাডায়।

দেশটির প্রায় শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদাসম্পন্ন বিভিন্ন প্রোগ্রাম থেকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও লুফে নিতে পারেন তাদের পছন্দের বিষয়টি। বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি হওয়ায় পড়াশনার খরচ খুব বেশি নয়, এছাড়া খন্ডকালীন কাজ ও বৃত্তির সুযোগ তো আছেই।

আবেদন যেভাবে:
কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে চাইলে সেশন শুরুর অনেক আগেই ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ভর্তি অফিস’ সেশন শুরুর এক বছর আগেই আবেদনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। দেশটিতে পড়াশোনা হয় দুই ভাষায়−ইংরেজি ও ফ্রেঞ্চ। ইংরেজি ভাষায় পড়াশোনা করতে চাইলে টোফেল স্কোর (আইবিটি) থাকতে হবে ৭৫, আইইএলটিএস-এর ক্ষেত্রে অন্তত ৬.০। পাশাপাশি ভালো একাডেমিক ফলাফল এবং আর্থিক সচ্ছতার নির্ভেজাল কাগজপত্রও থাকতে হবে। কানাডায় ভর্তি, পড়াশোনা, খরচসহ দরকারি সব তথ্য পাবেন এ ওয়েবে−www.studycanada.ca/english

অফার লেটার পেলেই ভিসা আবেদন:
অফার লেটার পাওয়ার পর আবেদন করতে হবে ভিসা বা স্টাডি পারমিটের জন্য। ভিসা পেতে বাংলাদেশে কানাডার দূতাবাস অনুমদিত ভিসা সেন্টারে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ফি জমা দিতে হবে। ঠিকানা: ভিএফএস কানাডা অ্যাপলিকেশন সেন্টার, তাজ ক্যাসিলিনা, ৩সি, তৃতীয় তলা, ২৫ গুলশান অ্যাভিনিউ, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।  ঢাকা ছাড়াও সিলেট ও চট্রগ্রামে আছে এ ভিসা সেন্টার।
ভিসা আবেদনের ফরম সংগ্রহ করতে কিংবা ভিসা আবেদনের তথ্য জানতে ভিজিট করুন এ সাইটে− www.vfs-canada.com.bd । ‘স্টুডেন্ট ভিসা’র জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র-ফিসহ আবেদন জমা দেয়ার পর এ সাইট থেকে আবেদন প্রক্রিয়ার সর্বশেষ অবস্থাও জানা যাবে।

স্থান ও বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে খরচও ভিন্ন:
কানাডায় টিউশন ফি কত হবে, তা নির্ভর করে স্থান ও বিশ্ববিদ্যালয়ার ভিন্নতার ওপর। ব্যাচেলর পর্যায়ে পড়াশোনা করতে বিষয়ভেদে ছয় হাজার থেকে দশ হাজার কানাডিয়ান ডলার খরচ হয় বছরে। অন্যদিকে দুই হাজার থেকে সাত হাজার কানাডিয়ান ডলার হলেই মাস্টার্সের অনেক প্রোগ্রামে পড়াশোনা করা যায় অনায়াসে। প্রসঙ্গত, ১ কানাডিয়ান ডলার প্রায় ৮২ টাকার সমান। অন্যান্য দেশের মতো কানাডায় বিদেশি শিক্ষার্থীরা ২০ ঘন্টা খন্ডকালীন কাজের সুযোগ পায়, তবে এর আগে ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করতে হয়।

আছে বৃত্তির সুযোগ:
বৃত্তি নিয়ে কানাডায় পড়াশোনা করছেন, এমন বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কম নয়। এ ছাড়া ভর্তির পর কানাডায় বিভিন্ন বৃত্তির আবেদনের সুযোগ তো আছেই। তবে এ ক্ষেত্রে, ভর্তি হওয়া প্রোগ্রামের পরীক্ষাগুলোতে শিক্ষার্থীর ভালো ফলাফল পেতে হবে। যে প্রোগ্রামে পড়াশোনা করছেন, এর পরীক্ষার সংশ্লিষ্ট প্রোগ্রামে ভালো ফলাফল পেতে হয়। কানাডা সরকার বিভিন্ন সময় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির ঘোষণা দিয়ে থাকে। দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওয়েবে পাবেন বৃত্তির তথ্য। কানাডা সরকারের বৃত্তির তথ্য পেতে নিয়মিত চোখ রাখুন এ দুটি সাইটে−www.studycanada.ca/english/scholarships_canada_international_students.htm ,www.canadainternational.gc.ca/bangladesh

বিশ্ববিদ্যালয়ের খোঁজ মিলবে অনলাইনে:
কানাডার সব বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যই মিলবে অনলাইনে। ভর্তি তথ্য, যোগ্যতা, আবেদন প্রক্রিয়া ও খরচের তথ্যসহ দরকারি সবই পাওয়া যাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইটে। ভর্তির আগে বিস্তারিত তথ্য জেনে নির্দেশনা অনুসরন করে আবেদন করুন।

কয়েকটি প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়:
টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয় (www.utoronto.ca), ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয় (www.mcgill.ca), দ্য ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলম্বিয়া (www.ubc.ca), ইউনিভার্সিটি অব অ্যালবের্টা (www.albarta.ca)।

তথ্য সূত্রঃ বিডিলাইভ২৪

থ্রিজির ইতিহাস এবং বাংলাদেশে

3g

থার্ড জেনারেশন বা থ্রিজি প্রযুক্তির সূচনা বাংলাদেশ এর যোগাযোগ প্রযুক্তির খাতে এনে দিয়েছে ব্যাপক সম্ভাবনা। এই থ্রিজি প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা যে কোনো তথ্য এখনকার চেয়ে কয়েকগুণ দ্রুত প্রেরণ ও গ্রহণ করতে পারবো। বাংলাদশে এখন র্পযন্ত এ্টাই সর্বাধুনিক মোবাইল প্রযুক্তি এবং বিশ্বেও মোবাইল ইউনিটগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধমান যা পূর্ববর্তী যেকোন মোবাইল প্রযুক্তির চেয়ে বেশি গতিসম্পন্ন। বাণিজ্যিকভাবে থ্রিজি প্রথম চালু হয় জাপানে। ২০০১ সালে জাপানের এনডিটি ডেকোমো চালু করে ডবিউ-সিডিএমএ প্রযুক্তি। ধীরে ধীরে সারা বিশ্বেও মিলিয়ন মিলিয়ন ব্যবহারকারীর কাছে পৌছে যায় এই থ্রিজি। বিশ্বের ৭১ টি দেশে তৃতীয় প্রজন্মের এই মোবাইল প্রযুক্তির ব্যবহার চললেও বাংলাদেশ অতি সম্প্রতি এ প্রযুক্তির সুফল ভোগ করার সুযোগ এসেছে।বিলম্ব হলেও অবশেষে সরকার দেশে থ্রিজির লাইসেন্স দেয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে সব মোবাইল কোম্পানির জন্য। এরই মধ্যে র্সব প্রথম রাষ্ট্রমালিকানাধীন টেলিটক থ্রিজি সেবা চালু করেছে।

থ্রিজি প্রযুক্তি কি?
বর্তমানে আমরা জিপিআরএস (জেনারেল প্যাকেট রেডিও সার্ভিস টেকনোলজি) বা ইউডিজির (ইনহ্যান্স ডাটা জিএসএম এনভারনমেণ্ট) মাধ্যমে সেলফোনে বা মোবাইলে পরিমিত গতির ইন্টারনেট সুবিধা ব্যবহার করে থাকি। থ্রিজি হলো আইটিইউ (ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন) স্বীকৃত এমন এক থার্ড জেনারেশন মোবাইল কমিউনিকেশন প্রযুক্তি যার মাধ্যমে থ্রিজি সম্পন্ন মোবাইল ফোন বা মডেমের মাধ্যমে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সুবিধা দেয়া সম্ভব।
সহজ কথায় বলতে গেলে, টেলিকমিউনিকেশন বা মোবাইল কমিউনিকেশনের একটি অত্যাধুনিক সংস্করণ এবং একই প্রযুক্তির মধ্যে জিএসএম, ইডিজিই, ইউএমটিএস ও সিডিএমএ-২০০ প্রযুক্তি অর্ন্তভূক্ত।

থ্রিজি ব্যবহারের সুবিধা:
থ্রিজি প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তি যেমন, উচ্চ গতিসম্পন্ন ভিডিও কনফারেন্স, উচ্চ গতির ওয়েব ও ওয়াপ ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ডাটা ট্রান্সফার, ইন্টারনেটের মাধ্যমে টিভি দেখাসহ আরও অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। রাষ্ট্রমালিকানাধীন টেলিটক থ্রিজি সেবা চালুর মাধ্যমে দেশে থ্রিজি সমর্থিত মোবাইলসেট ও স্মার্টফোনের ব্যবহার বেড়ে গেছে। থ্রিজি প্রযুক্তি আসার কারণে ভিডিও কলিং কনফারেন্সিং ,লোকাল বেইজড সার্ভিস, মোবাইল টিভির দখোর সুবিধা মানুষ পাচ্ছে। থ্রিজি সুবিধার কারণে শহর এবং গ্রামাঞ্চলের মানুষ ঘরে বসেই উচ্চ গতির ইন্টারনেট ব্রাউজিং করে নিজেদেরই কাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সম্যসা সমাধান করতে পারবে ।

শিক্ষাক্ষেত্রে থ্রিজির ব্যবহার :
বর্তমান বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার দিনদিন বড়েইে চলেছে। শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা প্রযুক্তিগত দিক থেকে এখনও কিছুটা পিছিয়ে আছে। সামগ্রিক ভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের শেখার পরিধি নির্দিষ্ট একটা গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ। ইন্টারনেটের বিশাল ভান্ডার এবং ই-লার্নিং পদ্ধতি এ ব্যবস্থার পরিবর্তন আনতে পারে।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শিক্ষাব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের কম্পিউটার,ল্যাপটপ ইত্যাদি ব্যবহারের সহজগোম্যতা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুলগুলোতে প্রয়োজনমাফিক কম্পিউটার ব্যবস্থার করার কারণে তারা প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে অনেক উন্নত। আমাদের দেশের বেশিরভাগ স্কুল ও কলেজে কম্পিউটার পৌঁছে গেলেও ব্যবহার ব্যাধি না জানা থাকার জন্য, সেইসাথে কম্পিউটার অপারেটিং সর্ম্পকিত নানা সম্যসার থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে তা ব্যবহার করতে পারছে না। বর্তমান যুগে শর শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে তাই তথ্যপ্রযুক্তির গুরুত্ব অপরিসীম।

স্বাস্থ্যখাতে থ্রিজির সম্ভাব্যতা :
বাংলাদেশে বেসরকারি মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর নেটওর্য়াক দেশব্যাপী বিস্তৃত রয়েছে। চিকিৎসা সেবার দিক দিয়ে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। দেশের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে এবং এবং থ্রিজি প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করা যেতে পারে। বিশ্বে বিভিন্ন দেশ যেমন; ভারত থ্রিজি প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের দেশের স্বাস্থ্যের মান উন্নত করেছে এবং তৃণমূল পর্যায়ে উন্নত সেবা প্রদানে সক্ষম হয়েছে। আমাদের দেশের মফস্বল তথা গ্রামাঞ্চলে স্বাস্থ্যব্যবস্থা বেশ অনুন্নত। সরকারি হাসপাতালের সেবার মান তেমন ভালো নয়, চিকিৎসকের সংখ্যাও কম যার কারণে গ্রামের দরিদ্র লোকজনের কাছে উন্নত চিকিৎসা সেবা যাচ্ছে না। তাই গ্রামাঞ্চলে উন্নতসেবা পৌছে দিতে প্রযুক্তির ব্যবহার প্রয়োজন এই বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। দেশের সব সরকারি,বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে একটি কেন্দীয় কম্পিউটার নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে হবে। সরকারি, বেসরকারি, প্যাথলজি,ডায়গনস্টিক সেন্টারগুলো ডাটাবেস কম্পিউটার দ্বারা সংগৃহীত রাখা হয়। আমরা এই ডাটাগুলো একটি সার্ভারে জমা রাখতে পারি যাতে প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক যেকোন স্থানে বসেই রোগীর ব্যবস্থাপত্র দিতে পারেন।এতে যে কোন রোগী তার চাহদিা মত উন্নত সেবা পাবেন। মোটকথা, আমাদেরকে স্বাস্থ্যখাতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে এবং আধুনিক ডিজিটাল পদ্ধতির আওতায় আনতে হবে। থ্রিজি প্রযুক্তি ব্যবহার করে টেলিমেডিসিন ও কম্পিউটারাইজড হাসপাতাল ম্যানেজমেন্ট পদ্ধতি তেরি করা গেলে দেশের স্বাস্থ্য সেবার মান অনেক উন্নত হতে পারে।

থ্রিজি প্রযুক্তি ব্যবহারে নিচের বিষয়গুলোর প্রয়োজনীয়তা জরুরী :

প্রযুক্তির ব্যবহার:
প্রযুক্তির ব্যবহার যেকোন উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ তা অনুমেয়। শিক্ষার্থীদের জন্য স্বল্পমূল্যে ল্যাপটপ ও ট্যবলেট বিতরণের মাধ্যমে সরকারি সংস্থার পাশাপাশি বেসরকারী সংস্থার উদ্যোগ প্রয়োজন। মূল কথা হলো, গ্রামীণ পর্যায়ের মানুষের কাছে প্রযুক্তিকে পরিচিত করে দেওয়া যাতে তারা যেকোন তথ্য সহজে পেতে পারে।

দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ:
থ্রিজি প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য দ্রুত গতির ইন্টারনেট প্রয়োজন। কিন্তু দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে দ্রুত গতির ইন্টারনেট সংযোগের অভাবে মানুষ প্রযুক্তির সুবিধা থেকে অনেকাংশেবঞ্চিত হচ্ছে।

ই-কনটেন্ট (মাতৃভাষায়)
ইন্টারনেটকে শিক্ষার্থীদে শিক্ষার উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করতে হলে প্রচুর পরিমাণে ই-কনটেন্ট দরকার যা মাতৃভাষায় করণীয়। বাংলায় ই-কনটেন্ট ভান্ডার আমাদের দেশে এখনো তৈরি হয়নি। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি ও বেসরকারি পর্যায়ে আরও অধিক পরিমাণে বাংলা ভাষায় কনটেন্ট প্রস্তুতের কাজ করা উচিত।

সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন:
থ্রিজি প্রযুক্তি অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহার করা গেলে ও সরকারিভাবে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য এই দুটি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার দেয়া উচিত। পাশাপাশি কর্তৃপক্ষকে লাইসেন্স দেওয়ার পূর্বে কয়েকটি বিভিন্ন গুরুত্ত পূর্ণ বিষয়ের সাথে সাথে আরও কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করা উচিত। যেমন; দেশের সব অঞ্চল যেন দ্রুত এই সেবার আওতায় চলে আসে, শহর ও গ্রামের মধ্যে যেন প্রযুক্তি বৈষম্য সৃষ্টি না হয়। এছাড়া যথাসম্ভব কম মূল্যে এ সেবা সবার দুয়ারে যেন পৌছানো সম্ভব হয় সে ব্যাপারে দেশের মানুষের আগ্রহের কমতি নেই, তারা যেন দ্রুত পরিবর্তনশী প্রযুক্তি দুনিয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে সেদিকে দেশের নীতি নির্ধারকদের বিবেচনা সাধারণ মানুষের কাছে কাম্য।

 লেখক পরিচিতিঃ

mehdi-hasan.jpg

– মেহেদী হাসান

সিনিয়র সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, সার্টিফাইট ইন্টানেট ওয়েব প্রফেশনাল, ব্র্যাক

ইন্টারনেট সচেতনতা বাড়াতে গ্রামীণফোনের ইজি নেট

easynet_

এখনও যেসব গ্রাহক ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত হননি তাদের জন্য ইজি নেট নিয়ে এলো গ্রামীণফোন। ইন্টারনেট ব্যবহারের সহজ প্রক্রিয়া ইজি নেট গ্রাহকদের ইন্টারনেট সম্পর্কে সচেতনতাকেই বৃদ্ধি করবে।
ইজি নেট ব্যবহার করে গ্রাহকরা বিভিন্ন ভিডিও টিউটোরিয়ালের মাধ্যমে ইন্টারনেট সম্পর্কে শিখতে পারবেন, একইসাথে তারা নির্দিষ্ট কিছু ওয়েবসাইট বিনামূল্যে ব্রাউজ করতে পারবেন এবং এর মাধ্যমে ইন্টারনেটের ছোটো প্যাকেজ কিনতে পারবেন। এ সব কিছুই গ্রাহক করতে পারবেন আগের কোনো ধরনের ইন্টারনেট প্যাকেজ ছাড়াই।
স্থানীয় একটি হোটেলে সাংবাদিকদের কাছে ইজি নেটের ধারণা উপস্থাপনকালে গ্রামীণফোনের চিফ মার্কেটিং অফিসার (সিএমও) ইয়াসির আজমান বলেন, “ইজি নেট আমাদের গ্রাহকদের ইন্টারনেট সম্পর্কে জানতে সাহায্য করবে এবং তাদের জীবনকে এগিয়ে নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানকে আরও শাণিত করবে। ”
গ্রাহকরা তাদের ফিচার অথবা স্মার্টফোন থেকে *৫০০০*৫৫# -এ নাম্বারে ডায়াল করলেই একটি মাইক্রো সাইটের লিঙ্ক পেয়ে যাবেন, যেখান থেকে তারা চাইলেই ভিডিও টিউটোরিয়ালের মাধ্যমে ইন্টারনেট ‘কি’ এবং এটি ‘কিভাবে’ ব্যববহার করা যায় জানতে পারবেন। ইন্টারনেট সম্পর্কে জেনে নিয়ে গ্রাহকরা জিরো ফেসবুক, জিরো উইকিপিডিয়া ইত্যাদির মতো অন্যান্য কিছু ওয়েবসাইট বিনামূল্যে ব্রাউজ করে ইন্টারনেটের অভিজ্ঞতা নিতে পারবেন।
গ্রাহকরা চাইলে ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য ওই লিঙ্ক থেকে ইন্টারনেটের ছোটো প্যাকেজ কিনে নিতে পারবেন।
এ প্রসংগে গ্রামীণফোনের সিএমও আরো বলেন, গ্রামীণফোন যে ‘সবার জন্য ইন্টারনেট’ পৌছে দেয়ার লক্ষ্য পূরণে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ইন্টারনেট ব্যবহারের এই সহজ প্রক্রিয়া চালুর মাধ্যমে তা আরেকবার প্রমাণিত হলো। ইন্টারনেট সম্পর্কে সচেতনতার অভাবই ইন্টারনেট সেবা ছড়িয়ে দেওয়ার পথে মূল বাধা। আমরা বিশ্বাস করি, এ বাধা কাটিয়ে উঠতে ইজি নেট আমাদের উল্লেখযোগ্যভাবে সাহায্য করবে।
বাংলাদেশে ‘সবার জন্য ইন্টারনেট’ নিশ্চিত করা গ্রামীণফোনের অন্যতম প্রয়াস। সারা দেশজুড়েই গ্রামীণফোনের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক বিস্তৃত রয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানটি দেশজুড়েই থ্রিজি সেবা ছড়িয়ে দিচ্ছে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে। বাংলাদেশে ইন্টারনেট জনপ্রিয় করে তুলতে, ইন্টারনেট সংযুক্ত সেবাগুলোর দাম কমানোর জন্য গ্রামীণফোন আরও কয়েকটি সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করছে যা গ্রামীণফোনের ‘সবার জন্য ইন্টারনেট’ নিশ্চিতকরণের প্রয়াসকে সফল করতে সাহায্য করবে।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণফোনের ডিরেক্টর মার্কেটং নেহাল আহমেদ, হেড অফ এক্সটার্নাল কমিউনিকেশনস সৈয়দ তালাত কামাল এবং জেনারেল ম্যানেরজার ওয়্যারলেস এন্ড ব্রডব্যান্ড তারিক উল ইসলাম।

৫ উপায়ে শরীর রাখুন বিষমুক্ত

toxic_bg

–  রাবেয়া বসরি সুমি

খাবার খাওয়ার পর তা অন্ত্রে রাসায়নিক রূপান্তরের ফলে সৃষ্টি হয় কিছু উপাদান, যা দীর্ঘকাল ধরে শরীরে থাকার জন্য পরিণত হয় বিষাক্ত উপাদানে। তবে এটা দূর করাও সম্ভব।

শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য শরীর বিষমুক্ত রাখা একান্ত প্রয়োজন। নিয়মিত সহজলভ্য কিছু খাবার গ্রহণের মাধ্যমে আমরা আমাদের শরীর থেকে এই বিষাক্ত উপাদানগুলো দূর করতে পারি।


তিতা খাবার
তিতা খাবার আমাদের শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান বের করে দিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে চিরতার পানি অথবা করলা কিংবা নিমপাতার রসের জুড়ি নেই।


লেবু
লেবুতে আছে একগুচ্ছ ডিটক্স ডাইট যা টক্সিন নামক বিশেষ প্রকার জৈব, যা বিষ নির্মূলে সহায়তা করে। এছাড়া লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি, যা দাঁত ও ত্বকের জন্য বিশেষ উপকারী। তাছাড়া লেবুর ক্ষারীয় প্রভাব আপনার শরীরে অম্লতার ভারসাম্য ফিরিয়ে আনে। প্রতিদিন এক ফালি লেবুর সাথে গরম পানি আপনার শরীর থেকে বিষ নির্মূল করবে।


রসুন
আমরা সবাই জানি হৃৎপিণ্ডের সুস্থতার জন্য সবচেয়ে উপকারী খাদ্য রসুন। এতে রয়েছে এলিসিন নামক রাসায়নিক উপদান যা রক্তে শ্বেত রক্তকণিকা উৎপাদন ও টক্সিন নির্মূলে সাহায্য করে। রস‍ুন কাচা খাওয়া সবচেয়ে উপকারী।


গ্রিন টি
শরীর থেকে বিষাক্ত জৈব রাসায়নিক নির্মূলে গ্রিন-টি’র কোনো বিকল্প নেই। তরল এই খাবার আমাদের শরীরের বিভিন্ন অংশের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এটি শুধু চা নয়, একে ওজন কমানোর ঔষুধও বলা চলে। এতে রয়েছে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।


টাটকা ফল
তাজা ফলে আছে ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার ও কম ক্যালোরি যা শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদানগুলো নির্মূলে সাহায্য করে।  সেই সঙ্গে চোখ ও ত্বককে উজ্বল করে এবং হজম শক্তি বাড়ায়।

এলার্জিকে আজীবনের জন্য গুডবাই দিন

elargi

মানব জীবনে এলার্জি কতটা ভয়ংকর সেটা ভুক্তভোগী যে সেই জানে। উপশমের জন্য কতজন কত কি না করেন। এবার প্রায় বিনা পয়সায় এলার্জিকে গুডবাই জানান আজীবনের জন্য। যা করতে হবে আপনাকে –

১) ১ কেজি নিম পাতা ভালো করে রোদে শুকিয়ে নিন।

২) শুকনো নিম পাতা পাটায় পিষে গুড়ো করুন এবং সেই গুড়ো ভালো একটি কৌটায় ভরে রাখুন।

৩) এবার ইসব গুলের ভুষি কিনুন। ১ চা চামচের তিন ভাগের এক ভাগ নিম পাতার গুড়া ও এক চা চামচ ভুষি ১ গ্লাস পানিতে আধা ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন।

৪) আধা ঘন্টা পর চামচ দিয়ে ভালো করে নাড়ুন।

৫) প্রতি দিন সকালে খালি পেটে, দুপুরে ভরা পেটে এবং রাত্রে শোয়ার আগে খেয়ে ফেলুন। ২১ দিন একটানা খেতে হবে।

৬) কার্যকারীতা শুরু হতে ১ মাস লেগে যেতে পারে। ইনশাআল্লাহ ভালো হয়ে যাবে এবং এরপর থেকে এলার্জির জন্য যা যা খেতে পারতেন না যেমন- হাঁসের ডিম, বেগুন, গরু, চিংড়ি সহ অন্যান্য খাবার খেতে পারবেন।

২০ আগস্ট ছোটদের বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড

alimpiad

২০ আগস্ট থেকে ঢাকায় শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াড (বিডিজেএসও)। বিশ্বের মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত আন্তর্জাতিক জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডের জন্য শিক্ষার্থী নির্বাচন হবে এর মাধ্যমে। বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশন (বিএফএফ) ও বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতি (এসপিএসবি) এর আয়োজক।
আয়োজকেরা জানিয়েছেন, মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর লক্ষ্যে ২০ আগস্ট বৃহস্পতিবার দেশে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হবে। এতে সারা দেশ থেকে প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেবে। টিচার্স ট্রেনিং কলেজে অলিম্পিয়াডের সমাপনী পর্বে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
এই প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম ও নবম-দশম শ্রেণি এই দুই বিভাগের নিবন্ধিত ২৫০ শিক্ষার্থী দেড় ঘণ্টার মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নেবে। মূল্যায়ন পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিজ্ঞান বিষয়ক মুক্ত আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেবেন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী রেজাউর রহমান, অধ্যাপক আলী আসগর, এফ আর সরকার, অধ্যাপক আরশাদ মোমেন প্রমুখ।
মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডের যাত্রা শুরু হয় ২০০৪ সালে। এবার দক্ষিণ কোরিয়াতে হবে এর দ্বাদশ আয়োজন। সেখানে প্রথমবারের মতো অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা।
বিশ্বের প্রায় ৫০টি দেশ আইজেএসওর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশ এ বছর যুক্ত হচ্ছে। বিডিজেএসওতে বিজয়ীদের নিয়ে ক্যাম্পের মাধ্যমে দলের সদস্যদের নির্বাচিত করবে আয়োজকেরা। নির্বাচিত সদস্যদের আইজেএসওতে যাওয়ার খরচ নিজেদেরই বহন করতে হবে।

রাসুলের [সা.] দেহে স্থাপিত মোহরে নবুয়তটি কেমন ছিলো!

mohar

মোহরে নবুয়ত হলো রাসুলের [সা.] দু’কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত একটি গোশতের টুকরা। এটি ছিলো নবিজির নবুয়তের নিদর্শন। এই নিদর্শনের কথা পূর্বেকার আসমানি গ্রন্থেও বর্ণিত আছে।

সাইব ইবনে ইয়াজিদ [রা] বলেন, একবার রাসুল [সা.] অজু করলেন। আমি তার অজুর অবশিষ্ট পানি পান করলাম এবং তার পেছনে গিয়ে দাঁড়ালাম। সহসা তার দুই কাঁধের মধ্যিখানে মোহরে নবুয়তের প্রতি আমার দৃষ্টি পড়ে। যা দেখতে অনেকটা কবুতরের ডিমের মতো। [সহিহ বোখারি, হাদিস-১৯০]

হজরত জাবের ইবনে সুমরা [রা] বলেন, আমি রাসুলের [সা.] দুই কাঁধের মাঝখানে থাকা মোহরে নবুয়ত দেখেছি। সেটা ছিলো অনেকটা ডিমের ন্যায় একটা লাল গোশতপিণ্ড। [সহিহ মুসলিম, হাদিস-৬২৩০]

কারো কারো মতে মোহরে নবুয়ত হলো একগুচ্ছ কেশ। [মুসনাদে আহমদ, হাদিস-২৬৮৩৬]

তবে এসব বক্তব্যের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করতে যেয়ে হাদিসবেত্তাগণ বলেছেন, মোহরে নবুয়ত এক টুকরো গোশতের ন্যায় ছিলো বটে, তবে তার উপরিভাগে ঘনকেশের আচ্ছাদন ছিলো। [শামায়েলে তিরমিজি-১৮]

–  মাওলানা মনযূরুল হক

কোথায় আছে নবী হযরত মুসার [আ.]-এর রহস্যময় অলৌকিক সেই সিন্দুক?

sinduk

অলৌকিক সিন্দুক’ বা ‘আর্ক অব দ্য কোভেন্যান্ট’। আরবিতে এবং কুরআনের ভাষায়- ‘তাবুত’। রহস্যময় এই সিন্দুকের ব্যাপারে মুসলিম, ইহুদি, খৃস্টান- তিনটি ধর্মের অনুসারীরাই একমত যে, এ সিন্দুকটির অস্তিত্ব আছে এবং এটি অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন। আল্লাহর পক্ষ থেকে রহস্যময় এ সিন্দুকটি বনি ইসরাইল সম্প্রদায়কে প্রদান করেছিলেন তাদের নবি হজরত মুসা [আ.]। কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, কোথায় আছে সেই রহস্যময় অলৌকিক সিন্দুক? কেন তাকে হাজার বছর ধরেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না? প্রতি শতাব্দীতে হাজারও রহস্যভেদী মানুষ সেই সিন্দুকটির খোঁজ করেছেন, কিন্তু পেয়েছেন বলে শোনা যায়নি। এখনও একদল রহস্যসন্ধানী লোক সিন্দুকটি হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছেন।

খৃস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে নবি মুসার মৃত্যুর পর তার সান্নিধ্যধন্য নবি ইউশা ইবনে নুন সিন্দুকটির তত্ত্বাবধান করতেন। তার মৃত্যুর পর বনি ইসরাইল সম্প্রদায়ের পুরোহিতগণ এটি দেখাশোনা করতেন। কেননা এই সিন্দুকের অলৌকিক ক্ষমতা ছিলো বলে তারা বিশ্বাস করতো। তারা বিশ্বাস করতো, এই সিন্দুক সঙ্গে থাকলে কেউ তাদের পরাজিত করতে পারবে না এবং তারা সবার ওপর বিজয় অর্জন করবে।

বেশ কিছু বছর ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে যুদ্ধের সময় সিন্দুকটি তাদের হাতছাড়া হয়ে যায়। কিন্তু ফিলিস্তিনিরা সিন্দুকটি নিয়ে বিপাকে পড়ে। কেননা যেখানেই সেটি রাখা হতো তার আশেপাশের লোকজনের মধ্যে মহামারী প্লেগ ছড়িয়ে পড়তো। এভাবে বেশ কিছুদিন তারা সিন্দুকটিকে বিভিন্ন স্থানে স্থানান্তরিত করে, একই ফল পাওয়া যায়। অনেক লোকের প্রাণহানি ঘটে। উপায়ন্তর না দেখে তারা সিন্দুকটিকে একটি গরুর গাড়িতে করে অজানার উদ্দেশে পাঠিয়ে দেয়।

এরপর এটি বাদশাহ তালুতের হস্তগত হয়। তিনি একজন ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ ছিলেন। কুরআনে তার এবং সিন্দুকটির বর্ণনা এসেছে-

وَقَالَ لَهُمْ نَبِيُّهُمْ إِنَّ آَيَةَ مُلْكِهِ أَنْ يَأْتِيَكُمُ التَّابُوتُ فِيهِ سَكِينَةٌ مِنْ رَبِّكُمْ وَبَقِيَّةٌ مِمَّا تَرَكَ آَلُ مُوسَى وَآَلُ هَارُونَ تَحْمِلُهُ الْمَلَائِكَةُ إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآَيَةً لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ

‘বনি-ইসরাইলদেরকে তাদের নবি আরো বললেন,তালুতের নেতৃত্বের চিহ্ন হলো এই যে, তোমাদের কাছে একটা সিন্দুক আসবে যাতে থাকবে তোমাদের পালকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের মনের প্রশান্তি, আর তাতে থাকবে মুসা, হারুন এবং তাঁদের সন্তানবর্গের পরিত্যক্ত কিছু সামগ্রী। সিন্দুকটিকে বয়ে আনবে ফেরেশতারা। তোমরা যদি ঈমানদার হয়ে থাক, তাহলে এতে তোমাদের জন্য নিশ্চিতই পরিপূর্ণ নিদর্শন রয়েছে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ২৪৮)

এরপর সিন্দুকটি হজরত দাউদ [আ.]-এর হাতে আসে এবং তিনি তার পুত্র হজরত সোলায়মান [আ.]-কে এর তত্ত্বাবধানকারী নিযুক্ত করেন। হজরত সোলায়মান [আ.] আল্লাহর নির্দেশে জেরুসালেমে তার উপাসনালয় নির্মাণের সময় তাতে সিন্দুকটি স্থাপন করেন এবং সুরক্ষার জন্য একটি বিশেষ স্থান তৈরি করেন। তার মৃত্যুর অনেক বছর পর ব্যাবিলনীয়রা জেরুসালেম দখল করে নেয় এবং তার উপাসনালয়টি ধ্বংস করে দেয়। এরপর থেকে সিন্দুকটির সঠিক অবস্থান আর জানা যায়নি। কিছু ইতিহাসগ্রন্থের ভাষ্য অনুযায়ী, ব্যাবিলনীয়রা জেরুসালেমের অন্যান্য সম্পদের সাথে সিন্দুকটিও নিয়ে যায়। কেউ বলছেন, ওই সময় আল্লাহর আদেশে সিন্দুকটি বেহেশতে স্থানান্তরিত করা হয়।

এরপর সিন্দুকটির অবস্থান সম্পর্কে অনেক গুজব শোনা যায়। শোনা যায়, সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবির সময় ইউরোপিয়ান নাইট টেম্পলার যোদ্ধারা সিন্দুকটি জেরুসালেম থেকে পুনরুদ্ধার করে আয়ারল্যান্ডে নিয়ে যায়। আবার কেউ কেউ মত দেন, এটি ইউথিওপিয়ার অর্থোডক্স চার্চে সুরক্ষিত আছে। কারো কারো মতে, এটি ভ্যাটিকান চার্চের গোপন কুঠুরিতে সুরক্ষিত আছে। কিন্তু এসবই গুজব যার কোনো প্রমাণ আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। আর সিন্দুকটিও পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম রহস্যময় বস্তু হিসেবেই মানুষের মধ্যে রয়ে গেছে।

[সূত্র : তাফসিরে ইবনে কাসির, তাফসিরে মাআরেফুল কুরআন, উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট]

–  হাফেজ মাওলানা সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীর